অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ কি - অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ

ঘাম আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী কারণ ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বাড়তি তাপ বেরিয়ে যেতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ কি তা আমরা অনেকেই জানিনা আবার অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ তাও আমরা জানি না আমরা এই পোস্টে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার লক্ষণ এবং এর লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।



পোস্ট সূচিপত্রঃঅতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ কি -  অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ

 অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ

অতিরিক্ত ঘাম আমাদের শরীরের একটি স্বাভাবিক রেচন প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে আমাদের শরীরের ক্ষতিকর এবং অপ্রয়োজনীয় পদার্থগুলো বেরিয়ে যায় এবং শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ না ঘুমান তবে আপনার মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। এর ফলে আপনার নিষ্ক্রিয়তা এবং ক্রিয়াশীলতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে আমাদের ঘুমের সমস্যা হতে পারে এবং সঠিক সময়ে ঘুম না আসার সম্ভাবনা বেশি থাকে।বিভিন্ন সিনড্রোম, ডিপ্রেশন বা সার্কোয়েজ রোগগুলো অতিরিক্ত ঘামের কারণে দেখা দিয়ে থাকে।

কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে

ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি আমাদের ঘাম বিষয়ক কার্যক্রমে সরাসরি কাজ করে থাকে যেমন। ভিটামিন ডি সূর্যের আলোর মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে থাকে।এটি ক্যালসিয়াম এবং ফসফেটের উপচারক হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন ডি এর অভাবে রিকেটস রোগ হয় যা শিশুদের বেশি হয় এ রোগ হওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরে আশ্চর্যজনকভাবে ঘাম বেড়ে যায়। আমরা জানি ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের কোষ গুলোকে সুস্থতা এবং সুঠাম করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

ক্যালসিয়ামের অভাব হলে কোষগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে কোষগুলো দুর্বল হয়ে পড়ার ফলে আপনার শরীরে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ঘাম বেড়ে যেতে পারে। ভিটামিন কে আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে যা আপনার ঘামের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত রয়েছে। ভিটামিন কে এর অভাবে আপনার শরীরে রক্তনালিতে কোন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হলে আপনার শরীরে ঘাম ঝরতে পারে সে সময় যেহেতু আপনার শরীরে ঘাম ঝরাটা স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে।

অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ কি

ঘাম আমাদের জীবনের স্বাভাবিক বিষয় হলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে আমরা জানি প্রতিটা দিকেরই একটি বিপরীত দিক রয়েছে তেমনি আমরা এখন জানবো অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ কি। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হওয়ার ফলে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ হয়। তাছাড়াও কাজের অতিরিক্ত চাপ, পরিবার-পরিজনদের অবহেলিত আচরণ তাছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চাকরি, এই ধরনের সমস্যার কারণে ও আপনার অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। শারীরিক সমস্যা ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, অস্থিরতা এ ধরনের সমস্যা গুলোর কারণে ও আপনার ঘাম হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজনও আপনার অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খাওয়ার ফলেও খাবারে পুষ্টিহীনতার অভাবে আপনার ঘাম হতে পারে। তাছাড়াও আপনার মানসিক উত্তেজনা, রাগ, ভয়, উদ্বেগের কারণে ঘাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। আপনার যদি ডায়াবেটিকস থাকে হঠাৎ শীতল ঘামে ভেঁপে উঠতেই সতর্ক হোন এবং পরীক্ষা করুন আপনার শরীরের শর্করা ঠিক আছে কিনা। আপনার ডায়াবেটিস দীর্ঘদিনের হলে খাওয়ার পর মাথা, কপাল, ঘাড় বেশি ঘামার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘাম বন্ধ করে কোন ভিটামিন

ঘাম বন্ধ হওয়ার নির্দিষ্ট কোন ভিটামিন নেই তবে ভিটামিন ডি এর মাধ্যমে কোষগুলো বা অস্থিকে সামান্য অতিরিক্ত ঘাম থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে থাকে। সূর্যের আলোর ফলে আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি প্রবেশ করে তার মাধ্যমে শরীরের প্রাকৃতিক ঘামের বের হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায় যে কারণে বলা যায় একমাত্র ভিটামিন ডি ঘাম বন্ধ হওয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

হঠাৎ ঘাম হওয়ার কারণ

হঠাৎ ঘাম আমার শুনতেই গা শিউরে উঠছে কারন আমি বিষয়টা জানি বিশেষজ্ঞদের মতে হঠাৎ ঘাম হার্ট অ্যাটাকের একটি লক্ষণ হতে পারে বা আপনার হার্টে কোন ধরনের সমস্যা হয়েছে এমন কারনেও আপনি অতিরিক্ত ঘামতে পারেন। হঠাৎ ঘ্যাম মানেই আপনাকে বুঝে নিতে হবে যে আপনার হৃদপিন্ডের গুরুতর কোন ধরনের সমস্যা হতে চলেছে। আপনি তৎক্ষণাৎ চেষ্টা করবেন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য।

গরমে আরাম নয় গরমে কঠিন পরিশ্রম করার ফলে ঘাম হওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু হঠাৎ যদি ঘাম উড়ে আসে তবে আপনাকে বুঝতে হবে এই ঘামের লক্ষণ মোটেও ভালো নয়। যে সময় হার্ট অ্যাটাক হয় সেই সময় কর্নারে ধমনী গুলি হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালন করতে বা রক্তপাম করতে ব্যর্থ হয় যার ফলে হার্ট এটাকের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে বেশিরভাগ ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার সুযোগ পায় না এমনকি শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয়।

ঘুমালে শরীর ঘামে কেন

যদিও ঘাম আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী কিন্তু রাতে ঘাম হওয়া মোটেও ভালো নয় কারণ রাতে ঘুমের সময় ঘাম হলে বোঝা কষ্ট হয়ে যায় যে কারণে ঠান্ডা এবং গরম লেগে যাওয়া সম্ভাবনা বেশি হয় যার ফলে সর্দি কাশি এমনকি অনেকেই জ্বরে ভুগে থাকেন। আমরা জানি ঘাম আমাদের শরীরের অতিরিক্ত তাপকে বাইরে নিয়ে আসতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এবং আমরা ঘুমানোর পর আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় যে কারণে রাতের বেলায় ঘুমালে বা ঘুমানোর পরে শরীরে ঘাম হয়।

হাত ঘামার কারণ কি

এলার্জি যার কারণে আপনার হাতে ঘাম হতে পারে। তাছাড়া হাত ঘামার কারণ হিসেবে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। অতিরিক্ত মানসিক উত্তেজনার কারণে ঘাম হতে পারে যে কারণে আপনার হাত ঘেমে যেতে পারে। অনেক সময় শরীরে ভিটামিনের অভাব থাকলেও ঘাম হয় মানসিক দুশ্চিন্তা ও জেনেটিক কারণে আপনার হাত ঘামতে পারে। হাত ঘামা আমাদের জন্য একটু দুর্ভাগ মাত্র যা আমাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন করে তোলে। আমাদের ভারসাম্যহীনতা বা চর্ম রোগের কারণে হাত ঘেমে থাকে। আপনার শারীরিক অসুস্থতা বা শরীরে গ্লুকোজের স্বল্পতার কারণেও হাত ঘামতে পারে।

মুখ ঘামার কারণ কি

আমরা অনেকেই মুখ ঘামা নিয়ে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ি। যদিও আমাদের ঘাম কোন আরামদায়ক অনুভূতি দেয় না কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ঘাম বিশেষ গুরুত্ব পালন করে থাকে। আপনার জেনেটিক সমস্যার কারণে মুখে ঘাম হতে পারে। আপনার বংশ পরম্পরা বা আপনার বংশগত যদি মুখে খামার সমস্যা থাকে তবে আপনার মুখে ঘাম হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমাদের অতিরিক্ত আবেগ এবং পরিবেশগত আবহাওয়া বা আমাদের কোন নির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়ার বদভ্যাস আমাদের মুখে ঘাম হওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

নাক ঘামার কারণ কি

নাক ঘামার অন্যতম কারণ হতে পারে আপনার মুখ তৈলাক্ত হওয়া। তাছাড়া আপনি যদি সঠিকভাবে নিয়মিত আপনার মুখ পরিষ্কার বা পানি দ্বারা পরিষ্কার না করেন সে ক্ষেত্রেও আপনার নাক ঘামতে পারে। তাছাড়া আপনার এলার্জির কারণেও নাক ঘামতে পারে।

পা ঘামার কারন কি

অতিরিক্ত ঝাল বা মসলাযুক্ত খাবার খেলে পা খামার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ঘাম সবারই হয় কারো কম কারো বেশি যদিও আমাদের শরীরে ঘাম হওয়া ভালো কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত পা ঘামার ফলে আমরা পরিবেশগতভাবে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয় যেমন দুর্গন্ধ পা ঘামতে যেন আমাদের আশেপাশে একটি বিশ্রী গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে যা মোটেও পরিবেশ উপযোগী নয়। এছাড়া আপনি উন্নত মানের পরামর্শ ও চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন বা আপনার করা উচিত হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম এ এস ওয়ার্ড স্টোরি এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪