এক ফোটা রক্ত তৈরি হতে কত সময় লাগে
এক ফোঁটা রক্ত তৈরি হওয়ার সময়টা নির্ভর করে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের উৎপাদনের সক্ষমতা এবং প্রক্রিয়ার উপরে। রক্তের প্রধান উপাদান গুলির বিভিন্ন টার বিভিন্ন সময় লাগে। লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং প্লাজমা। প্রধান রক্তের উপাদানগুলির রক্ত উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কার কেমন সময় লাগে তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
লোহিত রক্ত কণিকার স্বাভাবিকভাবে রক্ত উৎপাদন করার সক্ষমতা অর্জন করতে ৭ থেকে ১০
দিন সময় লেগে যায়। এটি সাধারণত অস্থিমজ্জায় উৎপন্ন হয়ে থাকে।
শ্বেত রক্ত কণিকার বেশ কিছু প্রকারভেদ রয়েছে এবং প্রতিটি প্রকারের উৎপাদনের সময় ও সক্ষমতা আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। আপনাদের সামনে উদাহরণস্বরূপ উপস্থাপন করা হলোঃনিউট্রোফিল এটি উৎপাদিত হতে সাধারণত প্রায়ই সাত দিন সময় লেগে থাকে। কিন্তু লিম্ফোসাইটের জন্য সময়টা নির্দিষ্ট নয় কম বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক এবং কম বেশি হয়ে থাকে।
আমাদের রক্তের তরল অংশ প্লাজমা যা আমাদের লিভার এবং অন্যান্য টিস্যু থেকে নির্গত
হয়ে থাকে। প্লাজমা উৎপাদন প্রক্রিয়া খুব একটা বেশি প্রয়োজন সাপেক্ষ না এবং এটা
আমাদের শরীরে নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ এবং পরিমিত উৎপাদিত হতে থাকে। যা
আমাদের শারীরিক সক্ষমতা এবং স্বাভাবিকত্ব বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে
থাকে।
যেহেতু রক্ত একক নয় সেহেতু ছোট রক্তের উৎপাদনের সময়সীমা নির্দিষ্ট হয়ে বলা
খুবই কঠিন তারপরও আপনাদের সামনে সাধারণভাবে উপস্থাপন করা হলো পুরো রক্তের
প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে
পারে।
লোহিত রক্ত কণিকা রক্তের একটি প্রধান উপাদান। এটির প্রধান কাজ হলো শরীরের বিভিন্ন
অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করা। লোহিত রক্তকণিকা সাধারণত বিচিত্রাকার হয়ে থাকে। যে
কারণে পৃষ্টের ক্ষেত্রফল অনুযায়ী বেড়ে যায় এবং এটি খুব সহজেই সংকুচিত হয়ে ছোট
ছোট রক্ত না লিখতে প্রবেশ করতেও পারে। এদের কোন নিউক্লিয়াস না থাকার ফলে এদের
ভিতর বেশিরভাগ পরিমানে হিমোগ্লোবিন থেকে থাকে।
লোহিত রক্ত কণিকা সাধারণত ১২০ দিন বেঁচে থাকে। লোহিত কণিকার মূল কাজগুলো হলো ফুসফুস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং শরীরের প্রতিটি কোষে তা সরবরাহ করে থাকে। ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ করার কাজটি হিমোগ্লোবিন প্রোটিনের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে। অনেক সময় রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দিয়ে থাকে।জেনেটিক ডিজঅর্ডার যেখানে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বা কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
শ্বেত রক্তকণিকার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে এছাড়াও প্রতিটি প্রকারের আবার নিজস্ব কিছু গুরুত্ব রয়েছে। তাদের বৈশিষ্ট্যগুলো উপস্থাপন করা হলো সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। ক্ষতিকর জীবাণু বিভিন্ন কোষ ও অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান গুলোকে খুব দ্রুত গলিয়ে ফেলা সম্ভব তাদের দ্বারা। শরীরে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করা যা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন প্রক্রিয়াটি তার নিজস্ব নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে নিয়ন্ত্রিত হয়।
প্লাজমা হল রক্তের তরল অংশ যা রক্তের বিভিন্ন কোষগুলোকে পরিবহন করে থাকে এটি
স্বচ্ছ এবং হালকা হলুদ বর্ণের রং ধারণ করে থাকে। প্লাসমা আমাদের শরীরের বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগে ও আমাদের রক্তের ৫৫% অংশ গঠন করে। প্লাজমার প্রধান কাজ
গুলো হলো আমাদের শরীরের কোষগুলি পুষ্টি সম্পন্ন রাখা হরমোন এবং প্রোটিন সরবরাহ
করা এবং বিভিন্ন বজ্র পদার্থ অপসারণ পরিচালনা করা।
কাটিং প্রোটিনের মাধ্যমে আমাদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা
কাজটি হল প্লাজমার একটি প্রধান কাজ। শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাও প্লাজমার
একটি প্রধান কাজ। প্লাজমার প্রধান উপাদান গুলি লিভার এবং শরীরের অন্যান্য টিস্যু
থেকে উৎপন্ন হয়ে থাকে। প্লাজমার কোন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হলে অনেক ধরনের রোগের
সৃষ্টি হয়ে থাকে যেমন প্লাজমার অভাবে রক্তের পরিমাণ কমে যাওয়া। প্লাজমা রক্তের
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কার্যাবলী সঠিকভাবে
সম্পাদন করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এম এ এস ওয়ার্ড স্টোরি এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url