এলার্জি দূর করার উপায় - এলার্জি থেকে দূরে থাকার উপায়

এলার্জি পুরোপুরি নিষ্পত্তি করা সম্ভব না বা নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব না কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই আমরা এই পোস্টে জানবো এলার্জি যাদের বেশি আছে তাদের কিভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যায়। এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করার, এলার্জি দূর করার উপায় এবং এলার্জি থেকে দূরে থাকার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। 



এলার্জি দূর করার উপায় - এলার্জি থেকে দূরে থাকার উপায়

এলার্জি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যেমন ত্বকে হতে পারে, রক্তে হতে পারে। শ্বাসযন্ত্রের যন্ত্রের এলার্জি হতে পারে।খাদ্যের এলার্জি হতে পারে।পোকামাকড়ের কামড়ে এলার্জি হতে পারে। পরিবেশগত কারণে এলার্জি হতে পারে। এলার্জি আবহাওয়া পরিবেশ এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উপস্থিতির প্রমাণ দিয়ে থাকে।

ত্বকে এলার্জি হওয়া অবস্থায় আমাদের ত্বকে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার জন্ম নেয়। চুলকানি শুরু হয় আমাদের ত্বকে লাল লাল ভাব হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ রেশ বা ফুলে ফুলে ওঠা ভাব হয়। এগুলো সাধারণত বাচ্চাদের মাঝে বেশি প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এলার্জি হওয়ার মূল কারণগুলো হলধুলা, ফুলের রেণু, পশুর লোম, ছাঁচ ইত্যাদি। খাদ্যের মধ্যে দুধ, ডিম, বাদাম, শেলফিশ ইত্যাদি। ত্বকের এলার্জি থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই ত্বক এবং পোশাক পরিষ্কার রাখতে হবে এবং ধুলাবালি এড়িয়ে চলতে হবে।

শ্বাসযন্ত্রের এলার্জি থেকে বাঁচার উপায় ধুলা এবং ধোঁয়া থেকে দূরে থাকুন। বাড়িতে নিয়মিত ধুলা মুছুন এবং হাওয়া পরিশোধক ব্যবহার করতে পারেন।বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে পরাগের সমস্যা বেশি হয়। এই সময়ে বাইরে যাওয়া কমিয়ে দিন। ধূমপান এবং ধূমপানের ধোঁয়া এলার্জি বাড়াতে পারে, তাই ধূমপান ত্যাগ করুন। নিয়মিত ব্যায়াম শ্বাসযন্ত্রের সুস্থতার জন্য সহায়ক।স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন। বিশেষ করে ভিটামিন সি ও ই যুক্ত খাবার শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

খাদ্যের এলার্জি এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে। এই এলার্জি খুব সাধারণ এবং বিভিন্ন খাবার থেকে হতে পারে।শিশুদের ক্ষেত্রে খাদ্য এলার্জি অনেক সাধারণ এবং অনেক সময় তারা বড় হওয়ার সাথে সাথে এ থেকে বেরিয়ে আসে। তবে, শিশুদের খাদ্য এলার্জি থাকলে তা বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।

  1. দুধ: গরুর দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
  2. ডিম: বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশ এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
  3. বাদাম: বিশেষ করে পিনাট এবং ট্রি নাট এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
  4. সীফুড: মাছ এবং শেলফিশএলার্জি দূর করতে সাহায্য করে এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
  5. সয়াবিন: সয়া প্রোটিন এবং সয়া পণ্য এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
  6. গম: বিশেষ করে গ্লুটেন এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।
  7. তিল: তিল এবং তিল থেকে তৈরি খাবার এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে।

  1. চিংড়ি
  2. বেগুন
  3. ইলিশ মাছ
  4. গরুর মাংস
  5. বাদাম

এ ধরনের খাবারগুলো আমাদের শরীরে এলার্জির প্রভাব বিস্তার করে থাকে এসব খাবার থেকে সাবধান হওয়া উচিত যাদের শরীরে এলার্জির প্রমাণ রয়েছে।

পোকামাকড়ের কামড় বা হুল ফোটানোর ফলে অনেকের মধ্যে এলার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এই প্রতিক্রিয়াগুলো কখনো কখনো মৃদু হতে পারে, আবার কখনো গুরুতর আকারও ধারণ করতে পারে।

মৌমাছি এবং বোলতা: এদের হুলে বিষ থাকে যা তীব্র এলার্জি প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।

মশা: মশার কামড়ে চুলকানি এবং ফোলা হতে পারে।

পিঁপড়া: বিশেষ করে অগ্নিপিঁপড়া (fire ant) কামড়ালে তীব্র ব্যথা এবং ফোলা হতে পারে।

মাকড়সা: কিছু বিষাক্ত মাকড়সার কামড় থেকেও এলার্জি হতে পারে।

কামড়ের স্থানে প্রাথমিক যত্ন:

হুল ফোটালে সেটি সাবধানে তুলে ফেলুন।

ক্ষতস্থানে সাবান এবং পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।

ফোলা এবং ব্যথা কমানোর জন্য ঠান্ডা সেঁক (কোল্ড কম্প্রেস) ব্যবহার করুন।

পরিবেশগত কারণগুলো প্রায়ই এলার্জির কারণ হতে পারে। এসব কারণ সাধারণত আমাদের আশেপাশের পরিবেশে উপস্থিত থাকে এবং প্রতিদিনের জীবনে আমাদের ওপর প্রভাব ফেলে।

  1. বসন্ত এবং শরৎকালে বাইরে সময় কম কাটানো।
  2. জানালা বন্ধ রাখা এবং এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা।
  3. বাইরে থেকে এসে জামা-কাপড় পরিবর্তন এবং শাওয়ার নেওয়া।
  4. নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করা, বিশেষত বিছানা, কার্পেট এবং পর্দা।
  5. হাইপোঅলার্জেনিক বেডিং এবং কভার ব্যবহার করা।
  6. হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখা।
  7. ভেজা এবং আর্দ্র স্থান শুকনো রাখা।
  8. বাথরুম এবং রান্নাঘরে ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করা।
  9. ছাঁচের সংক্রমণ হলে ছাঁচনাশক ব্যবহার করে পরিষ্কার করা।
  10. ধূমপান ত্যাগ করা এবং ধূমপায়ীদের থেকে দূরে থাকা।
  11. যানবাহনের ধোঁয়া এবং শিল্প কারখানার দূষণযুক্ত এলাকা এড়িয়ে চলা।
  12.  এলার্জির লক্ষণ কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ সেবন।
  13. নাকের প্রদাহ কমাতে স্টেরয়েড স্প্রে ব্যবহার।
  14. নিয়মিত ব্যায়াম করলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়।
  15. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো।
  16. ভালো ঘুম শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  17. সূর্যরশ্মি আমাদের শরীরে এলার্জির প্রভাব বাড়িয়ে তোলে।

গরম বা ঘাম থেকে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই খুব পরিশ্রম করার পর শরীর গরম হলে বা ঘেমে গেলে বাতাস চলাচল করছে এমন স্থানে থাকার চেষ্টা করুনএবং ঢিলেঢালা কাপড় পরুন।ঠান্ডা থেকেও এলার্জির সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন হলে বৃষ্টিতে ভেজা ও পুকুরে গোসল করা থেকে বিরত থাকা উচিত হবে। গোসলের সময়ে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা উচিত হবে।নির্দিষ্ট কিছু ধাতুতে কারোর এলার্জি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যে কারণে এসব বস্তু থেকে সাবধান হওয়া উচিত। যেমন ধাতুর তৈরি আংটি, গয়না ও ঘড়ি পরলে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। নির্দিষ্ট কোনো ধাতুতে আপনার এলার্জি থাকলে দৈনন্দিন জীবনে সেই ধাতুর তৈরি জিনিস ব্যবহার না করা আপনার জন্য উত্তম হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এম এ এস ওয়ার্ড স্টোরি এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪