মোটিভেশনাল গল্প
তার বাড়ির পাশে ভার্সিটি , সে খায় বিড়ি , তার স্বপ্ন ছিল সে পরবে ভার্সিটি ।
মোটিভেশনাল গল্প
কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হয়নি কারণ ছিল তার পরিবারের অবহেলা , পারিবারিক দরিদ্রতা এবং পারিবারিক শিক্ষা বিমুখতা । যার ফলে সে প্রাইমারির গণ্ডিও পেরোতে পারেনি।ছোটবেলা থেকেই চঞ্চল সাজেদ লেখাপড়ায় ভীষ মনোযোগী । কিন্তু তার লেখাপড়ায় মনোযোগ থাকলে কি হবে ।অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়নি ।
মাত্র নয় বছর বয়সে তাকে হোটেলে কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয় । সে পারিশ্রমিক হিসেবে সামান্যই বেতন পেতো তাতে তার পরিবারের চলতে ভীষণ কষ্ট হতো । সে ছাড়াও তার আরও ছোট তিনটা ভাই ছিল এবং একটি বোন .৬ সদস্যের পরিবার । তার বাবার সামান্য ইনকাম যা তার পরিবার চলনার জন্য যথেষ্ট না । কিন্তু সাজেদের বেতনে ও তার বাবার বেতনে পরিবার কোন ভাবে বেঁচে থাকে । সাজেদের মনে কষ্ট সে সারাদিন হোটেলে ভালো হলো খাবার খায় এবং ভালো ভালো খাবার পরিবেশন করে কিন্তু দিনশেষে বাড়ি ফিরে শেখায় পান্তা আর মরিচ ।
সে দুঃখ দুর্দশা অশ্রুসিদ্ধ চোখ নিয়ে ঘুমিয়ে যাই । সকালে আবার সে তার কর্মসংস্থানে ফিরে যায় এভাবেই তার কাজ ছিল বেশ কিছুদিন । হঠাৎ তার বাবা মারা যাওয়ার কারণে সে আরো অসহায় হয়ে পড়ে । সে তার পরিবারের একমাত্র ভরসা হয় আই রোজগার এবং খাবারের জন্য । সাজেদের একা তার পরিবারকে টানা সম্ভব নয় । কিন্তু তারপরেও সে অনেক কষ্টে তার কাজ চালিয়ে যেতে থাকে । কিন্তু সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে । তার দুইটা কিডনি অকেজো হয়ে যায় । সে হসপিটালে ভর্তি হয় , তার পরিবারের কোনো জমানো টাকা ছিল না।
যে কারণে সে প্রায় চিকিৎসাহীন অবস্থায় মেডিকেলের বারান্দায় কাঁদো কাঁদো আঁখি নিয়ে শুয়ে থাকে । সে সহ তার পরিবারের সকলেই মেডিকেল প্রাঙ্গণেই ছিল । কিন্তু তাদের তিনবেলা খাবারের কোন ব্যবস্থা ছিল না । এমনকি সাজেদের ওষুধ কেনার মত সামর্থ্য ছিল না তার পরিবারের কাছে । অসহায় পরিবারটি ভীষণ কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন পার করছিল । এমন সময় সাজেদের মা মেডিকেলে বারান্দায় বসে কান্না করা এক মহিলার কাছে যায় এবং জিজ্ঞাসা করে আপনার কি হয়েছে । আপনি কান্না করছেন কেন ওই মহিলাটি বলে আমার ছেলের একটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে ।
কিডনি কেনার মত টাকা আমাদের কাছে আছে কিন্তু কিডনি বিক্রি করার মত আমাদের কাছে কেউ । নেই হঠাৎ সাজেদের নিশ্চুপ হয়ে গেল । অনেকক্ষণ পর সে বলল যে আমি আমার একটি কিডনি বিক্রি করতে চাই । বিনিময়ে আমি আমার আরেকটি কিডনি আমার ছেলেকে দান করতে চাই । এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে যা অর্থের প্রয়োজন শুধুমাত্র আপনি তা ব্যয় করবেন । অতিরিক্ত আমাকে কোন অর্থ দেওয়া লাগবে না ।
যেমন কথা তেমন কাজ প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে ভরপুর সেই মহিলাটি যথারীতি তার ছেলেকে একটি কিডনি এবং সাজেদ কে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করালেন । সাজেদ জানতো না কিভাবে তার কিডনি প্রতিস্থাপিত হলো কিন্তু সাজিদের মা হারিয়ে গেল । তার ছেলের জন্য সে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে গেল । সাজেদের মায়ের আর কোন খবর পাইনি সাজেদ । তবে সাজেদদের মা যে মহিলাকে সহযোগিতা করেছিল , সে মহিলা সাজিদকে ব্যবসা করার মতো যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ দেয় । সাজেদ সুস্থ হলে সেই মহিলা সাজেদের মায়ের সব কথা সাজেককে খুলে বলে । সে কথা শুনে ভীষণ ভেঙে পড়ে।
সাজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তার ছোট ভাইকে সে ছোট একটি দোকান দিয়ে যায় । তার ব্যবসা ভালোই চলছিল কিন্তু সাজেদ মনে মনে ভাবতে থাকে আমার কারণে আমার মায়ের মৃত্যু হল । সে নিজেকেই কোনভাবে ক্ষমা করতে পারে না । সে নিজে নিজে একা হয়ে যায় এবং ভীষণ কষ্ট পেতে থাকে কষ্ট কষ্টে সাজেদ একসময় মারা যায় ।
দেখুন প্রকৃতির কি নির্মম পরিহাস , যাকে বাঁচানোর জন্য এত কিছু , ছেলেকে বাঁচানোর জন্য মা দিল বলিদান।সে মাকে না বাঁচাতে পাড়ার কারণে ছেলে দিল বলিদান । শুধু মাঝখান থেকে বেঁচে গেল বিত্তশালী সেই সন্তান ।
তুমি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা হল অর্থ ।
অর্থ আমাদের বিশেষ সময়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে থাকে।
এম এ এস ওয়ার্ড স্টোরি এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url